বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:আসানসোল পুরসভার নেমপ্লেট নিয়ে ভুয়ো পোস্ট করেছেন বলে অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাতে বিজেপি যুব মোর্চার নেতা বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই যুব নেতার মুক্তির দাবিতে আসানসোল পুলিশ কমিশনারের দফতরের সামনে ধরনায় বসেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সেই অবস্থায় বিজেপি সাংসদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাস্তায় নেমে পড়েন বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা। পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। পরে অবশ্য ব্যক্তিগত বন্ডে বিজেপি সাংসদকে জামিন দেওয়া হয় থানা থেকে।
বিজেপি যুব মোর্চা নেতা বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের খবরে শনিবার সকাল থেকেই উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়ায়। প্রশাসনের এমন আচরণকে অন্যায় বলে অভিযুক্ত করে বহু বিজেপি কর্মী–সমর্থকই ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। এর পর ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ যখন পথে নামার সিদ্ধান্ত নেন, বিজেপি কর্মী–সমর্থকরাও দলে দলে এসে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন। আসানসোল পুলিশ কমিশনারের দফতরের সামনে দলের কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে ধরনায় বসে পড়েন সাংসদ সৌমিত্র। ঘটনায় আসানসোল পুলিশে তৎপরতা তীব্র হয়ে ওঠে। প্রথমে পুলিশ তাঁদের উঠে যেতে বলে। কিন্তু তাঁরা না উঠে সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তখনই সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বেলা ১১টা নাগাদ সৌমিত্র খাঁকে গ্রেফতার করে আসানসোল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু দলীয় সাংসদকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এই খবর দক্ষিণ বাংলার পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ায় ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি। খবর পেয়েই রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা। ওই দুটি জেলার বিভিন্ন রাস্তায় তাঁরা নেমে পড়েন। বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করতে শুরু করেন তাঁরা। সকলেই দাবি করতে শুরু করেন, সাংসদ এবং যুব মোর্চার নেতাকে মুক্তি দিতে হবে। খবর পৌঁছয় আসানসোল থানায়। তখন আসানসোল থানা সৌমিত্র খাঁকে গ্রেফতার করে রাখার বেশি ঝুঁকি আর নেয়নি। ব্যক্তিগত বন্ডে সৌমিত্র খাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। যদিও বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে মুক্তি দেওয়া হয়নি এখনও। তাই বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা নিজেদের দাবি থেকে সরে আসেননি। পথ অবরোধ তুলে নিলেও তাঁরা জানিয়েছেন, বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে মুক্তি দেওয়া না হলে ফের আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
এদিকে, এদিন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, ‘এই রাজ্যের পুলিশ দলদাস হয়ে গিয়েছে। আর রাজ্যের শাসক দল তো দেউলিয়াই হয়ে গিয়েছে। তাই তারা নানা মিথ্যে অভিযোগে বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করতে বলছে পুলিশকে। পুলিশও তৃণমূলের প্রতি নিজেদের আনুগত্য প্রমাণ করতে বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। আর তাঁদের নামে কখনও গাঁজা মামলা, কখনও গরু পাচার, কখনও আবার ভুয়ো পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ করছে। কিন্তু পুলিশ ও তৃণমূল যেন মনে রাখে, যতই গ্রেফতার করা হোক না কেন, বিজেপি কর্মীরা তাদের ভয় পান না। এ ভাবে পশ্চিমবাংলায় বিজেপিকে আটকে রাখতে পারবে না তৃণমূল। ২০২১ সালে তাদের বিদায় নিতে হবেই।’